সৈয়দ আলী ও মুরগী চোর

রিমা শর্মা
৬ষ্ঠ শ্রেণি, মীরসরাই সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
একদেশে ছিল এক বনিক। সে বনিকের নাম ছিল সৈয়দ আলী। তাঁর ছিল মুরগির খামার। তিনি মুরগির ব্যবসা করতেন। তাঁর জীবন সুখ শান্তিতে কাটতে থাকে। তাঁর ছিল এক টিয়া পাখি। টিয়া পাখিটির নাম মিনি। মিনি সারাদিন উড়ে উড়ে মুরগির খামারের দিকে খেয়াল রাখতো। সৈয়দ আলী মিনিকে খাব ভালোবাসতেন। মিনিও সৈয়দ আলীকে খুব ভালোবাসতো। মিনিকে সৈয়দ আলী কথা বলতে শিখিয়েছিলেন। এখন মিনি পুরোপুরি কথা বলতে পারে। 

সৈয়দ আলী ছিলেন অনেক বড় লোক। তাঁর বাড়িটি ছিল রাজপ্রাসাদের মতো। মুরগির খামারের পাশে ছিল তাঁর বাড়ি। একদিন তিনি বাড়িতে বিশ্রাম করছিলেন। সৈয়দ আলীর চোখে ঘুম চলে এলো। আর মিনি উড়ে উড়ে খামার পাহারা দিচ্ছিল। হঠাৎ একটা চোর সৈয়দ আলীর খামার থেকে তিনটি মুরগি নিয়ে পালাচ্ছিল। মিনি চোরকে দেখে চোর-চোর করে চিৎকার করছিল। চিৎকার শুনে সৈয়দ আলীর ঘুম ভেঙে গেল। তিনি বললেন, 
কি হলো রে? কি হলো? 
মিনি আবার চিৎকার করে উঠলো- 
চোর, চোর। 
এবার সৈয়দ সাহেব বাইরে এসে দেখলেন, চোরটা তাঁর মুরগি নিয়ে পালাচ্ছে। সৈয়দ আলীও তার পিছনে পিছনে দৌড়াতে লাগলেন। সৈয়দ আলী ও চোরটা দৌড়াতে দৌড়াতে অনেক দূর চলে গেলেন। মিনি তাদের পিছনে পিছনে উড়ে উড়ে যাচ্ছিল। চোরটা পুকুর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় কাঁদায় পা পিছলে পড়ে যায়। তখন মুরগি তিনটি উড়ে সৈয়দ আলীর কাছে চলে এলো। চোরটি আবার পালিয়ে যেতে লাগলে মিনি পাখা ঝাপটে চোরের সামনে চলে আসে। সৈয়দ আলী চোরটিকে ধরে ফেললেন। চোরটি বলল, 
আমাকে ক্ষমা করে দিন। 
সৈয়দ সাহেব বললেন, 
তুমি চুরি করেছ কেন? 
চোরটা বলল, 
আমি ও আমার বউ, বাচ্চারা দু’দিন যাবত কিছু না খেয়ে আছি। 

চোরটির কথা শুনে সৈয়দ আলীর খুব দয়া হলো। তিনি চোরটিকে একটি মুরগি দিয়ে দিলেন। সৈয়দ আলী বললেন, 
আমার মুরগীর খামারের পাশে আগে একটি চায়ের দোকান ছিল। সেটি এখন পড়ে রয়েছে, তুমি চাইলে সেখানে কাজ করতে পার।
চোরটি বলল, 
হ্যাঁ, আমি কাজটি করবো। 
এরপর থেকে চোরটি সে দোকানে কাজ করতে লাগলো। তার আর কোন দুঃখ রইলো না। তার দোকানে সবাই চা খেতে আসে। সৈয়দ আলীও খুব খুশি। চোরটি সৈয়দ আলীকে কৃতজ্ঞতা জানায়। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

" বিজয় ও অভ্র " ----যাদের কল্যাণে আমরা বাংলায় কথা বলি

মা

প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী পরিষদের পথচলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ