সাহিত্য চর্চা
মাষ্টার গিয়াস উদ্দিন
ব্যাচঃ ১৯৭৮
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিচর্চার মাধ্যমে মানুষের সার্বিক মনমনসিকতায় উন্নত জীবনবোধ এবং সাবলীল নীতিনৈতিকতার মানবিক গুনাবলীর বিস্তার লাভ করে তা সবাই কমবেশি জানেন ও বোঝেন। কিন্তু জীবনে সেই আদিকাল থেকে সকল ছাত্রছাত্রী কিছু কিছু কবিতা, গল্প এবং উপন্যাস পড়লেও কলম হাতে কারো সৃজনশীলতা বিকাশ করার মতো সিংগভাগেরই নেই। আমাদের এ বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বড় বড় জ্ঞানীগুনী লেখক, কবি সাহিত্যিক যাঁদের কাছ থেকে মহৎ জীবনের প্রেরণা পেয়ে মানব সভ্যতা তরতর করে এগিয়ে গেছে তাঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের ছোটবেলা থেকে পা বাড়িয়েছেন তাঁদের শিক্ষক-অভিভাবক এবং সুধীজনদের আন্তরিক সহযোগিতায়। আমাদের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং সুধীজনেরা এ ব্যাপারে অত্যন্ত কৃপন ও উদাসিন। দুই/চারটা ব্যাতিক্রম হয়তো থাকতে পারে। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের বেশিরভাগের প্রত্যাশা হলো পরীক্ষার ফলাফল। মানে, A+ চাই, চাই। এ ভালো ফলাফল অর্জন করতে চাইলে এবং পেলে তা খুব চমৎকার। কিন্তু না পেলে তা ক্ষতি কি? সর্বতোমুখী জ্ঞানবিজ্ঞান ও সাহিত্য সংস্কৃতি পরিচর্চায় ছাত্রছাত্রীদের পরম উৎসাহিত করবার জন্যে আমাদের ওই বদ্ধধারণা ও সংকীর্ণ মানসিকতার আমুল পরিবর্তন চাই। আর তা এক্ষুণি, এ মুহূর্তে। এখানে উপস্থাপনকৃত এ কবিতার ভাবার্থ সঠিকভাবে অনুধাবনের জন্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কবিতাঃ- অপরাজিতা
কবিঃ- চন্দন রায়
(সংকলিত)
জানো মা, আমি কবিতা লিখেছি
তোমরা পড়বে তা?
মার কাছে এসে খাতা মেলে ধরে ছোট্ট অপরাজিতা।
মুখভার করে মা বলেন, মাথা খারাপ হলো?
ছাঁইপাস ওগুলো না লিখে অংকের খাতা খোলো।
গেলো সে বাবার কাছে, ও বাবা কবিতা লিখেছি,
মুখটি না তুলে বাবা বললেন, কবিতা লিখেছো?
বেশ! দেখবোইতো বটে আগে খবরের কাগজখানা
অগত্যা গেলো দিদির কাছে, ডাকলো, দিদি আয়-
দেখ্না কি রকম ছবি এঁকেছি এ কবিতায়
দিদির দু’চোখে ঝলমলে টিভির রোশনাই
কবিতা? তুই লিখেছিস? কবিতা না ওটা ছাঁই?
অপরাজিতার চোখ দু’টো ঝল্ঝল্, বুকে কান্নার ঢেউ
তার লেখা প্রথম কবিতা দেখলো না কেউ,
একা বসে সামনে তাকালো, মালাতে সে ছবি
সিন্ধু চোখে রয়েছে চেয়ে
কবিতার খাতা সে মেলে ধরলো ঠোঁট দু’টো থরথর
বললো, ঠাকুর, কেউ না পড়ুক তুমিই এ কবিতা পড়।
কি জানি কি করি, কি যে হয়ে গেলে
রবীঠাকুরের মালা থেকে
মাথার উপর রাখলেন তার, আদর মাখানো হাত
মনে হলো তার সামনে দাঁড়িয়ে সাক্ষাত রবীন্দ্রনাথ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন